Monday, August 25, 2025
HomeScrollAajke | শুভেন্দু অধিকারীর জেলে থাকা উচিত, বাইরে কেন?

Aajke | শুভেন্দু অধিকারীর জেলে থাকা উচিত, বাইরে কেন?

ভারতীয় সংবিধানের (Indian constitution) অনুচ্ছেদ ২৫ হল সেই প্রধান অনুচ্ছেদ যা নাগরিকদের ধর্মের অধিকার এবং স্বাধীনভাবে তাদের ধর্ম পালনের অধিকার দিয়েছে। এতে নিজের ইচ্ছেয়, নিজের বিবেকের ডাকে যে কোনও ধর্ম গ্রহণ, পালন ও প্রচারের অধিকার রয়েছে। আমাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৬ থেকে ২৮-এ এই অধিকার যাতে প্রত্যেক মানুষের থাকে, ধর্মের ভিত্তিতে যেন কোনও ধরনের বিভেদ না করা হয়, সেই অধিকারও দেওয়া আছে। ব্যক্তিগত ধর্মাচারের ক্ষেত্রে অনুচ্ছেদ ২৫ হল মূল ভিত্তি। এবং দেশে যে শাসকই থাকুক না কেন, আজ অবধি আমাদের সংবিধান এই অধিকার দিয়েছে। আচ্ছা যদি কেউ এই সংবিধানের দেওয়া অধিকার কেড়ে নিতে চায়? যদি কেউ ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদ সৃষ্টি করে? তাহলে কী হবে? তাহলে তার আইন অনুযায়ী বিচার হবে এবং তাকে জেলে পাঠানো হবে, হ্যাঁ যদি সঠিক বিচার হয়, তাহলে ধর্মের ভিত্তিতে যদি কোনও বৈষম্য হয়ে থাকে, যিনি করেছেন তিনি শাস্তি পাবেন।

এই ধর্ম পালন এবং ধর্মের ভিত্তিতে কোনও রকম বৈষম্য না থাকাটা আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকার। কিন্তু আমাদের কাঁথির খোকাবাবুর, তাঁর দলের, তাঁর সংগঠন আরএসএস-এর এই স্বাধীন দেশের সংবিধানের কোনও কথাতেই আস্থা বা বিশ্বাস নেই। নেই কারণ এই স্বাধীন দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে, এই স্বাধীন দেশের সংবিধান রচনায় তাঁদের কোনও ভূমিকাই নেই, উলটে তাঁরা সংগঠনগতভাবেই বিশ্বাসঘাতকের কাজ করেছেন, ৪২-এ ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বিরোধিতা করেছেন কেবল তাই নয়, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের কোনও পর্যায়েই তাঁদের কোনও নেতার ন্যূনতম ভূমিকা নেই। সেই দলের এক কচি নেতা এই রাজ্যে ধর্মীয় বিভেদের বিষ ছড়াচ্ছেন এবং তিনি জেলের বাইরে, সেটাই বিষয় আজকে, শুভেন্দু অধিকারীর জেলে থাকা উচিত, বাইরে কেন?

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি মাত্র ১২টি আসন জয়ী হওয়ার পর, ১৭ জুলাই শুভেন্দু হতাশ, পরাজিত, আর ঠিক সেই সময়েই তিনি প্রথমবার এই বিতর্কে নামলেন, জোর গলায়, প্রকাশ্যেই বিজেপির ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ স্লোগান তুলে দিতে আর দলের সংখ্যালঘু মোর্চা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে দিলেন। তিনি বলেন, “সবকা সাথ, সবকা বিকাশ বন্ধ করুন। সংখ্যালঘু মোর্চার প্রয়োজন নেই,” এবং দাবি করলেন যে মুসলিমরা তো বিজেপিকে ভোট দেয়নি, শুধুমাত্র হিন্দুরা তাদের সমর্থন করেছে, বললেন যে স্থানীয় ইমাম এবং মুয়াজ্জিনরা মুসলিমদের বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার হুমকি দিয়েছে, তাঁর হিসেব বলছে ২০২৪ সালে ৯৫ শতাংশ মুসলিম তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে, যা ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের থেকে নাকি ৯১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব এই বক্তব্যে প্রকাশ্যে বিব্রত হওয়ার নাটক করে, এবং রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) ও মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য খানিক নরম গলায় কিছু সংশোধন করার চেষ্টা করেছিলেন। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি, এই খোকাবাবু পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে ‘হিন্দুদের উপর বাংলাদেশ-স্টাইলের হামলা’ এর অভিযোগ করেন, বিশেষত উত্তর দিনাজপুর জেলার ডালখোলা থানার লোহাপুঞ্জির বাবানিয়া গ্রামের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন, যেখানে দুষ্কৃতীরা উস্কানি ছাড়াই হিন্দুদের উপর হামলা করে এবং লুটপাট করে, যার মধ্যে ৬০ বছর বয়সি একজন মহিলা, শিশু, একজন গর্ভবতী মহিলা এবং একজন পুরুষ যার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। পরে দেখা যায়, এটা ছিল কিছু দুষ্কৃতিকারীদের ঘটনা, তার উপরে সাম্প্রদায়িক রং চড়িয়ে তিনি সারা রাজ্যে আগুন লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন, সফল হননি। এই ঘটনায় প্রত্যেক দোষীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, মামলাও চলছে, কিন্তু তিনি এখনও মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশের হিন্দু নিপীড়নকে সামনে রেখে এক সাম্প্রদায়িক আগুন জ্বালিয়ে রাখতে চান। ২০২৫ সালের ১১ মার্চ, টাচ মি নট খোকাবাবু আবার বিতর্ক সৃষ্টি করেন এই বলে যে ২০২৬ সালে বিজেপি সরকার গঠন করলে তারা “মুসলিম বিধায়কদের শারীরিকভাবে বিধানসভা থেকে বের করে দেবেন”, এবং দাবি করেন যে তখন সব তৃণমূল বিধায়ক মুসলিম হবে এবং কোনও হিন্দু তৃণমূল বিধায়ক থাকবে না। কতটা সাম্প্রদায়িক হলে এ ধরনের কথা বলা যায়? বিধানসভার একজন বিরোধী দলনেতা এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন? এবং এসব বলার পরেও তিনি জেলের বাইরে। আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, প্রকাশ্যে বার বার হিন্দু মুসলমান নিয়ে চূড়ান্ত সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা বলেই যাচ্ছেন শান্তিকুঞ্জের এই খোকাবাবু, কখনও বলছেন বাংলার ৩০ শতাংশ মুসলমানের ভোট তাঁর চাই না, কখনও বলছেন মুসলমানরা বিধায়ক হলে তাঁদের চ্যাংদোলা করে বাইরে ফেলে দেবেন। এবং এর পরেও তিনি জেলের বাইরে কেন? কোন বিশেষ অধিকারে তিনি এসব সংবিধানবিরোধী কথা বলার পরেও জেলের বাইরেই ঘুরে বেড়ান?

আরও পড়ুন: Aajke | বিজেপি জমানায় খবর করলে লাশ পড়ে যাবে

১১ মার্চ, টাচ মি নট খোকাবাবু আবার বিতর্ক সৃষ্টি করেন এই বলে যে ২০২৬ সালে বিজেপি সরকার গঠন করলে তারা “মুসলিম বিধায়কদের শারীরিকভাবে বিধানসভা থেকে বের করে দেবেন” এটা সংবিধান বিরোধী কথা, কেবলমাত্র এই কথা বলার জন্যই তাঁর ৬ বছর জেলে থাকার কথা, সে না হয় বাদই দিলাম, কিন্তু এরমধ্যে মজার ব্যাপার হল তিনি এই বাংলার সেই একমাত্র মানুষ যিনি মনে করেন যে ২০২৬ এ তাঁরা এই বাংলার সরকার তৈরি করবেন, এবং যদি করেন, তাহলে নাকি মুসলমান বিধায়কদের চ্যাংদোলা করে ছুড়ে ফেলে দেবেন। শুনলাম অষ্টম শ্রেণির শিক্ষকেরা বাংলা বাগধারা পড়ানোর সময়ে গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল বাগধারাকে বোঝাতেই নাকি শুভেন্দুর এই কথা টাকেই উদাহরণ হিসেবে রেখেছেন। সেই শুভেন্দুবাবু গাছে কাঁঠাল দেখে গোঁফে তেল দিচ্ছেন বটে কিন্তু শুনলাম সস্তার বলেই নাকি জেলেও কয়েদিদের এই কাঁঠাল খাওয়ানোর ব্যবস্থা হচ্ছে।

অন্য খবর দেখুন 

YouTube player
Read More

Latest News